মোঃ মাসুম উদ্দিন……..//
মুসলমানদের সবচেয়ে বড় দুটো ধর্মীয় উৎসবের মধ্যে একটি ঈদুল ফিতর অন্যটি হলো ঈদুল আযহা৷ ধর্মীয় পরিভাষায় একে ইয়াওমুল জায়েজ অর্থ: পুরস্কারের দিবস হিসাবেও বর্ণনা করা হয়েছে৷
দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনা ও সামর্থ্যবানদের ফিতরা ও যাকাত আদায়ের পর মুসলমানেরা এই দিনটি ধর্মীয় কর্তব্যপালনসহ খুব আনন্দের সাথে পালন করে থাকে,এই দিনে তারা একে অন্যকে “ঈদ মোবারক” বলে শুভেচ্ছা জানায়।
আজ ২৯ রমজান সূর্যাস্তের পর পশ্চিম আকাশে শাওয়াল মাসের সেই কাঙ্ক্ষিত হেলাল বা নতুন চাঁদ দেখা দিলে আগামীকাল সোমবার পালিত হইবে পবিত্র ঈদুল ফিতর। আর যদি চাঁদ না দেখা যায়, তা হলে পরবর্তী দিন মঙ্গলবার সারা দেশে একযোগে পালিত হবে মুসলমানদের অন্যতম প্রধান এই ধর্মীয় উৎসব। মূলত সারা বিশ্বের প্রতিটি জাতিরই নিজস্ব উৎসব রহিয়াছে। তবে মুসলিম জাতির ধর্মীয় আনন্দোৎসব পৃথিবীর অন্যান্য জাতি-গোষ্ঠীর ধর্মীয় উৎসবের চাইতে একেবারেই আলাদা ও ভিন্নতর।
ইসলাম প্রবর্তিত আনন্দ উৎসবে এমন সব অনুষ্ঠানাদি ও আবশ্যক দায়িত্ব-কর্তব্য আছে, যা ইহকাল ও পরকালের জন্য কল্যাণকর।
আমরা জানি, আরবি ‘ঈদ’ অর্থ খুশি, আনন্দ; আর ‘ফিতর’ শব্দের অর্থ স্বভাব বা ভঙ্গকরণ। দীর্ঘ এক মাস মহান আল্লাহ-তায়ালার নির্দেশ পালনার্থে সংযম সাধনার পর বিশ্বজাহানের মুসলমানগণ এই দিন উপবাস ব্রত হইতে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়া আসেন এবং এই উপলক্ষ্যে আনন্দোৎসব করে থাকেন, এই জন্য এই উৎসবের নামকরণ করা হইয়াছে ‘ঈদুল ফিতর’ বা স্বাভাবিকতায় প্রত্যাবর্তন বা রোজা ভঙ্গের উৎসব।
পৃথিবীর অনাদিকাল হইতে মানবজাতির দৈহিক, মানসিক ও আত্মিক পরিশুদ্ধির জন্য রোজা বা উপবাসব্রত পালনের রীতিনীতি চলিয়া আসিতেছে। বিশেষ করিয়া, মাহে রমজানের এক মাস সিয়াম সাধনের পর রোজাদারগণ যেমন সদ্যপ্রসূত শিশুর মতো নিষ্পাপ হইয়া যান, তেমনি তাহারা ঈদুল ফিতরের দিন আল্লাহর রেজামন্দি বা বিশেষ সন্তুষ্টি লাভ করিলে তাহাদের মনে আধ্যাত্মিক আনন্দ আর ধরিয়া রাখা যায় না। তাহারই কৃতজ্ঞতা স্বরূপ তাহারা ঈদের দিন দুই রাকাআত ওয়াজিব নামাজ আদায় করেন। এই আনন্দের আতিশয্যে আল্লাহর সন্তুষ্টিকল্পে গরিব-দুঃখীর মধ্যে দানখয়রাতসহ নানাভাবে পরোপকার ও পরস্বার্থে নিজেকে বিলীন করিয়া দেন।