1. live@aponsangbad.online : আপন সংবাদ : আপন সংবাদ
  2. info@www.aponsangbad.online : আপন সংবাদ :
সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:৫৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
রামগড়ে ত্রিপুরা জাতির ঐতিহ্যবাহী বৈসু উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র‍্যালি-আপন সংবাদ। দখলদার ইজরাইলী বাহিনী গাঁজাবাসীদের নৃশংস বর্বর গণহত্যার প্রতিবাদে ভূজপুর থানা জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিল-আপন সংবাদ। আপন সংবাদের পক্ষ থেকে দেশ এবং দেশের বাহিরে সর্বস্তরের সকলকে ঈদ শুভেচ্ছা- আপন সংবাদ খাগড়াছড়িতে আনসার-ভিডিপি সদস্যের মাঝে মহাপরিচালক’র ঈদ উপহার বিতরণ। আল্লামা নিজামী শাহ (রঃ)১১১তম বেলাদত বার্ষিকী মোবারক হোক-আবছার তৈয়বী। মানিকছড়িতে জামায়াত ইসলামীর আয়োজনে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত -আপন সংবাদ। মানিকছড়িতে বদরী কাফেলা যুব সংস্থার উদ্যোগে অসহায়দের মাঝে বস্ত্র বিতরণ-আপন সংবাদ। রামগড়ে দেশীয় তৈরী ৩০লিটার মদসহ রাজীব গ্রেফতার -আপন সংবাদ জিয়ার সাথে যেদিন আমার শেষ দেখা ওয়াদুদ ভূইয়া-আপন সংবাদ শান্তিরহাট বাজারে আগুনে পুড়া ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের মাঝে নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান-আপন সংবাদ

জিন্দা থাকলে নিন্দা হয়-আপন সংবাদ

নিজস্ব প্রতিবেদন
  • প্রকাশিত: সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ৩২ বার পড়া হয়েছে

“নিন্দা না থাকলে পৃথিবীতে জীবনের গৌরব থাকত না। একটা ভালো কাজে হাত দেওয়া হল অথচ কেউ যদি তার নিন্দা না করে তবে সে কাজের কোনও দাম থাকে না।”

——- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর 🙏

পরনিন্দা পৃথিবীতে এত প্রাচীন এবং এত ব্যাপক যে, সহসা ইহার বিরূদ্ধে একটা যে-সে মত প্রকাশ করা ধৃষ্টতা হইয়া পড়ে।

নোনা জল পানের পক্ষে উপযোগী নহে এ কথা শিশুও জানে–কিন্তু যখন দেখি সাত সমুদ্রের জল নুনে পরিপূর্ণ, যখন দেখি এই নোনা জল সমস্ত পৃথিবীকে বেড়িয়া আছে, তখন এ কথা বলিতে কোনো মতেই সাহস হয় না যে, সমুদ্রের জলে নুন না থাকিলেই ভালো হইত। নিশ্চয়ই ভালো হইত না, হয়তো লবণ জলের অভাবে সমস্ত পৃথিবী পচিয়া উঠিত।

তেমনি পরনিন্দা সমাজের কণায় কণায় যদি মিশিয়া না থাকিত তবে নিশ্চয়ই একটা বড়ো রকমের অনর্থ ঘটিত। উহা লবণের মতো সমস্ত সংসারকে বিকার হইতে রক্ষা করিতেছে।

পাঠক বলিবেন, “বুঝিয়াছি! তুমি যাহা বলিতে চাও, তাহা অত্যন্ত পুরাতন। অর্থাৎ, নিন্দার ভয়ে সমাজ প্রকৃতিস্থ হইয়া আছে।”

একথা যদি পুরাতন হয় তবে আনন্দের বিষয়। আমি তো বলিয়াছি, যাহা পুরাতন তাহা বিশ্বাসের যোগ্য।

বস্তুত নিন্দা না থাকিলে পৃথিবীতে জীবনের গৌরব কী থাকিত? একটা ভালো কাজে হাত দিলাম, তাহার নিন্দা কেহ করে না, সে ভালো কাজের দাম কী! একটা ভালো কিছু লিখিলাম,তাহার নিন্দুক কেহ নাই, ভালো গ্রন্থর পক্ষে এমন মর্মান্তিক অনাদর কী হইতে পারে! জীবনকে ধর্মচর্চায় উৎসর্গ করিলাম, যদি কোনো লোক তাহার মধ্যে গূঢ় মন্দ অভিপ্রায় না দেখিল তবে সাধুতা যে নিতান্তই সহজ হইয়া পড়িল।

মহত্বকে পদে পদে নিন্দার কাঁটা মাড়াইয়া চলিতে হয়। ইহাতে যে হার মানে বীরের সদ্গতি সে লাভ করে না। পৃথিবীতে নিন্দা দোষীকে সংশোধন করিবার জন্য আছে তাহা নহে, মহত্বকে গৌরব দেওয়া তাহার একটা মস্ত কাজ।

নিন্দা-বিরোধ গায়ে বাজে না, এমন কথা অল্প লোকই বলিতে পারে। কোনো সহৃদয় লোক তো বলিতে পারে না। যাহার হৃদয় বেশি তাহার ব্যথা পাইবার শক্তিও বেশি। যাহার হৃদয় আছে সংসারে সেই লোকই কাজের মতো কাজে হাত দেয়। আবার লোকের মতো লোক এবং কাজের মতো কাজ দেখিলেই নিন্দার ধার চারগুণ শাণিত হইয়া উঠে। ইহাতেই দেখা যায়, বিধাতা যেখানে অধিকার বেশি দিয়াছেন সেইখানেই দুঃখ এবং পরীক্ষা অত্যন্ত কঠিন করিয়াছেন। বিধাতার সেই বিধানই জয়ী হউক। নিন্দা দুঃখ বিরোধ যেন ভালো লোকের, গুণী লোকের ভাগ্যেই বেশি করিয়া জোটে। যে যথার্থরূপে ব্যথা ভোগ করিতে জানে সে’ই যেন ব্যথা পায়। অযোগ্য ক্ষুদ্র ব্যক্তির উপরে যেন নিন্দা-বেদনার অনাবশ্যক অপব্যয় না হয়।

সরলহৃদয় পাঠক পুনশ্চ বলিবেন, “জানি, নিন্দায় উপকার আছে। যে লোক দোষ করে তাহার দোষকে ঘোষণা করা ভালো; কিন্তু যে করে না তাহার নিন্দায় সংসারে ভালো হইতেই পারে না। মিথ্যা জিনিসটা কোনো অবস্থাতেই ভালো নয়।”

এ হইলে তো নিন্দা টিঁকে না। প্রমাণ লইয়া দোষীকে দোষী সাব্যস্ত করা, সে তো হইল বিচার। সে গুরুভার কয়জন লইতে পারে, এবং এত সময়ই বা কাহার হাতে আছে? তাহা ছাড়া পরের সম্বন্ধে এত অতিরিক্ত মাত্রায় কাহারো গরজ নাই। যদি থাকিত তবে পরের পক্ষে তাহা একেবারেই অসহ্য হইত। নিন্দুককে সহ্য করা যায়, কারণ, তাহার নিন্দুকতাকে নিন্দা করিবার সুখ আমারও হাতে আছে; কিন্তু বিচারককে সহ্য করিবে কে?

বস্তুত আমরা অতি সামান্য প্রমাণেই নিন্দা করিয়া থাকি, নিন্দার সেই লাঘবতাটুকু না থাকিলে সমাজের হাড় গুঁড়া হইয়া যাইত। নিন্দার রায় চূড়ান্ত রায় নহে; নিন্দিত ব্যক্তি ইচ্ছা করিলে তাহার প্রতিবাদ না করিতেও পারে। এমন-কি, নিন্দাবাক্য হাসিয়া উড়াইয়া দেওয়াই সুবুদ্ধি বলিয়া গণ্য। কিন্তু নিন্দা যদি বিচারকের রায় হইত তবে সুবুদ্ধিকে উকিল-মোক্তারের শরণ লইতে হইত। যাঁহারা জানেন তাঁহারা স্বীকার করিবেন, উকিল-মোক্তারের সহিত কারবার হাসির কথা নহে। অতএব দেখা যাইতেছে, সংসারের প্রয়োজন হিসাবে নিন্দার যতটুকু গুরুত্ব আবশ্যক তাহাও আছে, যতটুকু লঘুত্ব থাকা উচিত তাহারও অভাব নাই।

(‘বিচিত্র প্রবন্ধ’ থেকে গৃহীত) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট